মোঃ আবু সালেহ শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : বকেয়া বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আরএকে সিরামিক্স কারখানার শ্রমিকরা।
এসময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৫জন শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
রোববার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় অবস্থান নেন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় পুলিশ এসে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।
আব্দুল কাদের মিয়া নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘দীর্ঘ সাত মাসের বেতন বাকি। চাইলে বলে: "দিই, দিচ্ছি, এভাবে শ্রমিকদের ঘুরাচ্ছে। শ্রমিকদেরি তো সংসার, ছেলেমেয়েদের স্কুলের বেতন ও দোকান বাকি আছে। তাদের রক্ত ঘাম এক করে খেটে খাওয়া উপার্জিত বকেয়া টাকার জন্যই শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছে। আশা করছি, প্রশাসন ও পুলিশ ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে। এসময় আরো কিছু শ্রমিককে তাদের অভাবের কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরতে দেখা যায়।
কাজিম উদ্দিন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, 'জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বেতনের সঙ্গে অ্যাগ্রিমেন্টের সাত মাসের এরিয়া বিল আগস্ট মাসের ১ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সঠিক পদে সঠিক কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। যোগ্য পদে অযোগ্য লোক থাকলে অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ মোট ১০ দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। না মানা হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এবং এ আন্দোলন দিন দিন আরো শক্তিশালী হবে।
এ বিষয়ে জানতে আরএকে সিরামিক কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। থানা পুলিশের সাথে শিল্প পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আকস্মিক ভাবে শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। একই সাথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও কারখানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে, এ ঘটনায় এলাকাবাসী, শ্রমিক ও বিভিন্ন স্তরের লোকেরা বকেয়া বেতন পরিশোধ করে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী মেনে নিতে কারখানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।